Posts

৫ কালিমা

 ৫ কালিমা কালিমা তাইয়্যেবা আরবি : لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ বাংলা উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। বাংলা অর্থ : আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।   কালিমা শাহাদৎ আরবি : اشْهَدُ انْ لّآ اِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه، وَ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدً اعَبْدُهوَرَسُولُه বাংলা উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। বাংলা অর্থ : আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। তিনি এক। তাঁহার কোন অংশীদার নেই, এবং আমি আরও সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ্র প্রেরিত বান্দা ও রাসূল।   কালিমা তামজীদ আরবি : سُبْحَان لِلّه وَ الْحَمْدُ لِلّهِ وَ لآ اِلهَ اِلّا اللّهُ، وَ اللّهُ اَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلاَ قُوَّة ِلَّا بِاللّهِ الْعَلِىّ الْعَظِيْم বাংলা উচ্চারণ: সুব্হানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আক্বার ওয়ালা হাওলা ক্বুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল্ আলিইল্ আ...

খন্দকের যুদ্ধ

  খন্দকের যুদ্ধ   (৫ম হিজরীর শাওয়াল মোতাবেক ৬২৬ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাস) মদীনা থেকে বনু নাযীর ইহুদী গোত্রটিকে খায়বরে নির্বাসনের মাত্র ৭ মাসের মাথায় খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদীনার উপরে পুরা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং দীর্ঘ প্রায় এক মাস ব্যাপী কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতাপূর্ণ অভিযান। এই যুদ্ধে শত্রু সৈন্যের সংখ্যা ছিল  ১০,০০০।  যা ছিল মদীনার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মিলে মোট জনসংখ্যার চাইতে বেশী। মুসলিম বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা ছিল  ৩০০০।  কিন্তু তারা যে অভিনব ঈরানী যুদ্ধকৌশল অবলম্বন করেন, তা পুরা আরব সম্প্রদায়ের নিকটে ছিল অজানা। ফলে তারা হতাশাগ্রস্ত ও পর্যুদস্ত হয়ে অবশেষে পলায়ন করতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধের নেপথ্যচারী ছিল মদীনা থেকে বিতাড়িত বনু নাযীর ইহুদী গোত্রের নেতারা। মদীনার শনৈঃশনৈ উন্নতি দেখে হিংসায় জর্জরিত খায়বরে বিতাড়িত বনু নাযীরের ইহুদী নেতারা ২০ জন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে মক্কার কুরায়েশ নেতৃবৃন্দ এবং নাজদের বেদুঈন গোত্র বনু গাত্বফান ও অন্যান্য বড় বড় গোত্রের কাছে প্রেরণ করে। তারা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকলের সাধারণ শত্রু মুসলিম শক্তি...

বদর হ’তে ওহোদ

  বদর হ’তে ওহোদ   (২হিঃ ১৭ই রামাযান হ’তে ৩হিঃ ৭ই শাওয়াল) বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর অভূতপূর্ব বিজয়ে ৪টি পক্ষ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ হয়। মক্কার কুরায়েশরা, মদীনার ইহুদী ও মুনাফিকেরা এবং মদীনার আশপাশের নাজদ প্রভৃতি এলাকার বেদুঈনরা। তারা সাধ্যমত সকল উপায়ে মদীনায় একটি স্থিতিশীল ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করতে থাকে। এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনা নিম্নে সংক্ষেপে উদ্ধৃত হল- (১) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র: বদর যুদ্ধে গ্লানিকর পরাজয়ে এবং শীর্ষ নেতাদের হারিয়ে কুরায়েশরা যখন ক্ষোভে-দুঃখে আত্মহারা, তখন এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অন্যতম নেতা ছাফওয়ান বিন উমাইয়া বদর যুদ্ধের সামান্য পরে একদিন কা‘বা গৃহের রুকনে হাতীমে বসে ওমায়ের বিন ওহাব আল-জামহীর সঙ্গে শলা-পরামর্শ করল যে, তুমি তোমার ছেলেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মদীনায় গিয়ে মুহাম্মাদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাকে হত্যা করবে। বিনিময়ে আমি তোমার যাবতীয় ঋণ পরিশোধের ও তোমার পরিবার পালনের দায়িত্ব নিচ্ছি। উল্লেখ্য যে, ওমায়ের-এর পুত্র ওহাব বদর যুদ্ধে বন্দী হয়ে মদীনায় ছিল। দুজনের মধ্যে এই চুক্তি হওয়ার পরে এবং তা সম্পূর্ণ গোপন রাখা...

বনু নাযীর যুদ্ধ

  বনু নাযীর যুদ্ধ   (৪র্থ হিজরীর রবীউল আউয়াল মোতাবেক ৬২৫ খৃষ্টাব্দের আগষ্ট মাস) ইসলাম ও মুসলমানের প্রতি চরম বিদ্বেষী মদীনার ইহুদী গোত্রগুলির অন্যতম হল বনু নাযীর গোত্র । তারা তওরাতে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী শেষনবীকে ঠিকই চিনেছিল। কিন্তু তিনি বনু ইস্রাঈল বংশের না হয়ে বনু ইসমাঈল বংশের হওয়ায় তারা তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং সর্বপ্রকার শত্রুতায় লিপ্ত হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মদীনায় এসে অন্যদের ন্যায় তাদের সাথেও শান্তি চুক্তি করেন। তাতে বলা ছিল যে, কেউ কারু বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না। শত্রুকে সাহায্য করবে না। রক্তমূল্য আদায়ের সময় পরস্পরকে সাহায্য করবে। সকলে রাসূলকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে মদীনাকে রক্ষা করবে। হুওয়াই বিন আখত্বাব, সালাম বিন আবুল হুক্বাইক্ব, সালাম ইবনু মুশকিম প্রমুখ ছিল এদের নেতা। ২য় হিজরীতে বদর যুদ্ধের এক মাস পরে অন্যতম ইহুদী গোত্র বনু ক্বায়নুক্বার বিতাড়ন ও ৩য় হিজরীর মধ্য রবীউল আউয়ালে ইহুদী নেতা কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের ফলে তাদের মধ্যে সাময়িকভাবে যে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল, ৩য় হিজরীর শাওয়ালে ওহোদ যুদ্ধে বিপর্যয়ের ফলে তা দূরীভূত হয়। তারা পুনরায় অঙ্গীকার ভঙ্গ করা এবং মদীনার মুন...

বানুল মুছত্বালিক্ব অথবা মুরাইসী‘ যুদ্ধ

  বানুল মুছত্বালিক্ব অথবা মুরাইসী‘ যুদ্ধ   ★★★  সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল  ৬ষ্ঠ  হিজরীর শা‘বান মাসে। কারণ ছিল এই যে, এ মর্মে মদীনায় খবর পৌঁছে যে, বানুল মুছত্বালিক্ব গোত্রের সর্দার হারেছ বিন আবু যাররাব রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নিজ গোত্র এবং সমমনা অন্যান্য আরব বেদুঈনদের সাথে নিয়ে মদীনা অভিমুখে যাত্রা করেছেন। বুরাইদা আসলামীকে পাঠিয়ে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) উক্ত খবরের সত্যতা যাচাই করলেন। তিনি সরাসরি গোত্র নেতা হারেছ-এর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে রাসূলকে উক্ত বিষয়ে অবহিত করেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সাঃ)  ৩রা  শা‘বান তারিখে মদীনা হতে সসৈন্যে রওয়ানা হন। সৈন্যসংখ্যা সম্পর্কে কোন তথ্য জানা যায়নি। তবে ওহোদ যুদ্ধ থেকে পিছু হটার পর এ যুদ্ধেই প্রথম মুনাফিকদের একটি দল রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধে গমন করে। ইতিপূর্বে তারা কোন যুদ্ধে গমন করেনি। এ সময় মদীনার দায়িত্ব যায়েদ বিন হারেছাহ অথবা আবু যার গেফারী অথবা নামীলাহ বিন আব্দুল্লাহ লায়ছীর উপরে অর্পণ করা হয়। যাত্রা পথে গোত্র নেতা হারেছ প্রেরিত একজন গুপ্তচর আটক হয় ও নিহত হয়। এ খবর জানতে পেরে হারেছ বাহিনীতে আতংক...

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে হত্যার প্রচেষ্টা সমূহ

  রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে হত্যার প্রচেষ্টা সমূহ   (১) হিজরতের রাতে:  ১৪শ নববী বর্ষের ২৭শে ছফর মোতাবেক ৬২২ খৃষ্টাব্দের ১২ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতের পর। (২)  পরদিন ১৩ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার ছওর পাহাড়ের গুহামুখে উপস্থিত শত্রুদের ব্যর্থ চেষ্টা। যারা ১০০ উট পাওয়ার লোভে তাঁর সন্ধানে বের হয়েছিল। (৩)  ৬২২ খৃষ্টাব্দের ১৮ই সেপ্টেম্বর বুধবার বনু মুদলিজ গোত্রের নেতা সুরাক্বা বিন মালেক বিন জু‘শুম কর্তৃক হিজরতের পথিমধ্যে হামলার ব্যর্থ প্রচেষ্টা। (৪)  পরদিন ১৯শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সাক্ষাত যমদূত হিসাবে দেখা দেয় বিখ্যাত আরব বীর বুরাইদা আসলামী ও তার ৭০ জনের একটি পুরস্কার লোভী দল। কিন্তু রাসূলের সঙ্গে কথা বলার পর বুরাইদা তার দলবলসহ ওখানেই মুসলমান হয়ে যায় ও রাসূলের দেহরক্ষী বনে যায়। (৫)  ২য় হিজরীর ১৭ই রামাযানে সংঘটিত বদর যুদ্ধের কয়েক দিন পরে মক্কার নেতা ছাফওয়ান বিন উমাইয়ার কুপরামর্শে দুষ্টমতি ওমায়ের বিন ওয়াহাব আল-জামহী তীব্র বিষ মিশ্রিত তরবারি নিয়ে মদীনা আগমন করে। কিন্তু রাসূল (সাঃ) তাকে দেখেই কাছে ডেকে নিয়ে মক্কায় বসে ছাফওয়ান ও তাঁর মধ্যকার গোপন পরামর্শ এবং...

বনু কুরায়যার যুদ্ধ

  বনু কুরায়যার যুদ্ধ   (৫ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ ও যুলহিজ্জাহ ৬২৬ খৃষ্টাব্দের মার্চ ও এপ্রিল মাস) মদীনায় অবস্থিত তিনটি ইহুদী গোত্রের সর্বশেষ গোত্রটি ছিল বনু কুরায়যা। এদের সঙ্গে রাসূলের চুক্তি ছিল যে, তারা বহিঃশত্রুর আষমণ কালে সর্বদা রাসূলকে সাহায্য করবে। গোত্রনেতা কা‘ব বিন আসাদ কোরাযী নিজে উক্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তাদের বাসস্থান ছিল মুসলিম আবাসিক এলাকার পিছনে। মাসব্যাপী খন্দক যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা মুসলিম বাহিনীকে কোনরূপ সাহায্য করেনি। মুনাফিকদের ন্যায় তারাও যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছিল। ইতিমধ্যে বিতাড়িত বনু নাযীর ইহুদী গোত্রের নেতা হুয়াই বিন আখত্বাব খায়বর থেকে অতি সঙ্গোপনে বনু কুরায়যার দুর্গে আগমন করে এবং তাদেরকে নানাভাবে মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে ফুসলাতে থাকে। সে তাদেরকে বুঝায় যে, কুরাইশের নেতৃত্বে সমস্ত আরবের দুর্ধর্ষ সেনাদল সাগরের জোয়ারের মত মদীনার উপকণ্ঠে সমবেত হয়েছে। তারা সবাই এই মর্মে আমার সাথে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে যে, ‘মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীদের উৎখাত না করা পর্যন্ত তারা ফিরে যাবে না’।  [1] কা‘ব বিন আসাদ দুর্গের দরজা বন্ধ করে দেন ও বারবার তাকে ফিরে যেতে বলেন এবং ...